‘আমি চালবাজিটা করেছি পজেটিভলি’


‘শাকিব খান’ বাংলা চলচ্চিত্রের এক আস্থার নাম। দেশের পর এবার কলকাতাতেও নির্মাতাদের ভরসার প্রতীক হয়ে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। কলকাতার অন্যান্য নায়কদের তুলনায় বর্তমানে শাকিব খানের পারিশ্রমিক অনেক বেশি।

সপ্তাহ দুয়েক পর কলকাতায় মুক্তি পাচ্ছে শাকিব খান অভিনীত ‘চালবাজ’। জয়দীপ মুখার্জির পরিচালনায় তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন শুভশ্রী গাঙ্গুলি।

সম্পতি কলকাতার এবেলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাকিব খান বলেন, ‘চালবাজি শব্দটা আমরা সাধারণত নেগেটিভ মনে করি। এক্ষেত্রে আমি চালবাজিটা করেছি পজেটিভলি। আর বেশি কিছু বলব না। পুরোটা জানতে গেলে দর্শককে ছবিটা দেখতে হবে।’

কলকাতার এবেলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন শাকিব খান। বিডি২৪লাইভ ডটকমের পাঠকদের জন্য হুবহু তা তুলে ধরা হলো-

‘নবাব’-এর পর আবারো শুভশ্রীর সঙ্গে কাজ প্রসঙ্গে শাকিব বলেন, ‘প্রথম থেকেই ওর সঙ্গে আমার কেমিস্ট্রিটা বেশ ভাল! ‘নবাব’ বিগ হিট ছিল। বিদেশেও মুক্তি পেয়েছিল।’

যেভাবে থেমে থেমে, ভেবেচিন্তে কথা বলছেন- ব্যক্তিগত জীবনেও কি আপনি এতটাই সংযমী? এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমি কেমন, সেটা মাঝে মধ্যে আমিও বুঝে উঠতে পারি না! কখনো মনে হয়, আমি ইন্ট্রোভার্ট। আবার কখনো মনে হয়, এক্সট্রোভার্ট। আপনি এখন আমাকে এ রকম দেখছেন। যখন টানা তিন-চারদিন ছুটি পাই, তখন আমি সম্পূর্ণ অন্যরকম মানুষ হয়ে যাই।’

বাংলাদেশের ফিল্ম তারকাদের তালিকা যদি বানানো হয়, তাহলে এক থেকে পাঁচ নম্বর পুরোটাই শাকিব খানের দখলে। এই সুপার-স্টারডমের রহস্যটা কী? শাকিব বলেন, ‘খুব ভগ্নদশায় আমি আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটাকে পেয়েছিলাম। আপনি যদি ২০০০ সাল অবধি বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রিকে দেখেন, তখন আমাদের ওখানে টালিউডের চারগুণ বাজেটের ছবি তৈরি হতো। সেই সময় আমরা তখন দু’কোটি টাকায় ছবি বানাতাম। টালিউডে ছবির বাজেট তখন ৫০ লাখ। তখন আমাদের সুপারস্টার ছিলেন সালমান শাহ। শাহরুখ খানের সঙ্গেও ওর ভালো আলাপ ছিল। তখন স্টারডম কাকে বলে, সেটা ওকে শিখতে হয়! তখনকার তারকাদের হাতে প্রায় ২০-২৫টা ছবি থাকব। আমাদের ছবি সুপারহিট হলে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যবসা করত। ভাবতে পারছেন!’

‘সালমান শাহ মারা গেলেন। আরো যারা স্টার ছিলেন, তারা অনেকে অভিনয় ছেড়ে গিলেন। অনেকে বিয়ে করে নিলেন। আমি যখন ইন্ডাস্ট্রিতে আসি, তখন আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একটা ক্রান্তিকাল চলছিল। তারপর কোথা থেকে একটা অশ্লীল পিরিয়ড চলে এসেছিল। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি তখন ফাঁকা মাঠ। কোনো ভালো তারকা নেই। সেই সুযোগে কিছু দুষ্টু লোক ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকে পড়েছিল। তারাই অশ্লীলতাগুলো করত! মান্না ভাই সেই সময় ইন্ডাস্ট্রির অভিভাবক ছিলেন। ওর নেতৃত্বে ইন্ডাস্ট্রি ওই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সিনেমা হল রাজকীয় ব্যবসা! সারা বিশ্বে তারাই সিনেমা বানান- যাদের প্রচুর অর্থ রয়েছে, সঙ্গে একটা শিল্পী মনও রয়েছে। অনেক নামী প্রযোজকও অশ্লীলতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দেন। ওই সময়টাতেই ইন্ডাস্ট্রি অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছিল। তারপর ইন্ডাস্ট্রিটাকে নতুন করে সাজাতে প্রচুর সময় লেগে গেল। আজকে বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রি যে অগ্রগতিটা করেছে, সেটা আরও আগে হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু ১৯৯৫-২০০০ সালের সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা যায়নি।’ এভাবে জানালেন বাংলাদেশে ইন্ডাস্ট্রি কিভাবে পিছিয়ে পড়ল।

যৌথ প্রযোজনা সম্পর্কে বলেন, ‘আরে, যৌথ প্রযোজনা তো মিঠুনদা’র (চক্রবর্তী) সময় থেকেই হয়ে আসছে। সেই সময় ‘অন্যায় অবিচার’র মতো ছবি হয়েছিল। রাজেশ খান্না, শশী কাপুরও ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। মাঝে কিছুটা সময় ব্যাপারটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন আবার যৌথ প্রযোজনা শুরু হয়েছে। এপার বাংলা-ওপার বাংলা দু’টো দেশ হতে পারে, কিন্তু আমাদের সংস্কৃতি তো একই! আমাদের রুচিবোধও এক। যেদিকে ব্যাপারটা এগোচ্ছে, সেটা ভালোর দিকেই!’

সাম্প্রতিক সময়ে প্রেম-বিয়ে নিয়ে গণমাধ্যমে বেশ আলোচিত হন শাকিব। তার ভাষ্যে, ‘ইটস পার্ট অফ লাইফ! মানুষ আমাদের ভালোবাসেন। সেই কারণেই আমাদের সম্পর্কে তাদের এতো আগ্রহ। ভালোবাসা থেকেই আসে ব্যাপারটা। খারাপ লাগে না তা নয়, কিন্তু ঠিক আছে...!’

প্রিয় তারকার পান থেকে চুন খসলে বাংলাদেশের মানুষ সোশ্যাল সাইটে তাকে তুলোধোনা করেন। অশালীন শব্দও বাদ যায় না। এটা কেন হয় বলুন তো? এমন প্রশ্নে বলেন, ‘ভালো-মন্দ তো সব জায়গাতেই রয়েছে। দুষ্টুলোকেদের কাজই তো খারাপ কাজ করা। আমার মনে হয়- তাদের পিছনে সময় না দিয়ে, ভালো মানুষদের নিয়ে আলোচনা করাই শ্রেয়!’

Collected News : bd-pratidin.com

No comments

Powered by Blogger.