‘বিএনপি নেতাকর্মীদের জীবন কাটছে জেলখানায় না হয় বারান্দায়’


নির্বাচন কমিশন (ইসি) আদৌ দুই সিটির নির্বাচন সুষ্ঠু চায় কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে না, গত দুদিন ধরে ঘোষণা দিচ্ছে নির্বাচন কমিশনার। ইলেকট্রনিক ভোটের মেশিন ব্যবহারে জনগণের আগ্রহ না থাকলেও নির্বাচন কমিশন অনেক সেন্টারে ইভিএম ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে।

রবিবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশনের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বক্তব্যে সরকারি ইচ্ছার প্রতিফলন দেখা যায় মন্তব্য করে রিজভী বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি না করে, সরকারি ফর্মুলায় নির্বাচন করতেই ইসি আগাম মন্তব্য দিলেন কি না সে প্রশ্নটি এখন ক্রমাগত সম্প্রসারিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে দুই সিটিতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু নেই। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দুই সিটিতে সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও সন্ত্রাসীদের হাতে হাতে বৈধ-অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি। বৈধ অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দুই সিটিতে সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল করছে, মিটিং করছে, সমাবেশ করছে বীরদর্পে। অন্যদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের সভা-সমাবেশ দূরের কথা বাড়িতে ঘুমাতে পর্যন্ত পারছে না। বিএনপি নেতাকর্মীদের জীবন কাটছে হয় জেলখানায় না হয় আদালতের বারান্দায় বারান্দায়। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মিথ্যা মামলা মাথায় নিয়ে দিনের পর দিন পুলিশের দৃষ্টি এড়িয়ে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বর্তমানে সরকারের দলীয় বাহিনীর মতো কাজ করছে অভিযোগ করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, তাদের পক্ষে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভয়মুক্ত ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। ভোটাররাও তাদের ওপর আস্থাশীল হতে পারবেন না। বর্তমান বিরাজমান পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করতে হলে সেনা মোতায়েন অত্যাবশ্যক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

রিজভী বলেন, প্রায় দুমাস ধরে কারারুদ্ধ জনতার ভালবাসায় সিক্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রকৃত পরীক্ষা-নিরীক্ষা দ্বারা চিকিৎসা না দিয়ে গতকাল সম্পূর্ণ প্রহসন করতে পিজি হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকরাও সুযোগ পাননি তাঁকে চিকিৎসা দেওয়ার।

তিনি বলেন, পুলিশী হিংসাত্মক আচরণ ও নির্বিচারে গ্রেফতারের আতঙ্কজণক পরিবেশেও আপোষহীন নেত্রী কেমন আছেন সেটুকু দেখার জন্য উদগ্রীব ছিল দেশের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। অসুস্থতা সত্ত্বেও গণমাধ্যমের কল্যাণে জাতি দেখল দৃঢ়তর এক উন্নত মম শির।

দুর্নীতি পরায়ণ কলুষ থেকে মুক্ত করুন দেশমাতৃকাকে। হিংসার কারণে কারাদণ্ড দিয়ে শাসকগোষ্ঠী ভেবেছিল আমি অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে টলে পড়বো বা রোগে শোকে কাতর হয়ে যাবো। কিন্ত সরকারের সে আশা কখনই সফল হবে না।

পিজি হাসপাতালে গাড়ি থেকে নামার পর জনতা দেখল সাহসী দৃঢ়চেতা আর আস্থায় অবিচল দেশনেত্রীকে। মানুষ উপলব্ধি করলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আপোষহীন নেত্রীর অকুতভয় দুর্জয় সাহস। কারাগারের উদ্দেশ্যে গাড়িতে তোলার সময় কেবিন ব্লকের বারান্দাগুলোতে রোগী, নার্স ও চিকিৎসকসহ উৎসুক হাজারো জনতা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সংগ্রামী এই নেত্রীকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। কারাগারের স্যাঁতস্যাঁতে অন্ধকার প্রকোষ্ঠে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরও এতটুকু দমে যাননি বেগম খালেদা জিয়া। গতকালের হাসোজ্জ্যল অভিব্যক্তির সে বার্তাই জানান দিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Collected News : bd24live.com

No comments

Powered by Blogger.