বিজ্ঞানী জানালেন, টেলিপ্যাথি মিথ্যে নয়!
আপনি হয়তো মনে মনে নিকট কোনো বন্ধুকে খুব মনে করছেন! দেখা গেল, কিছুক্ষণের মধ্যেই সে ফোন দিয়েছেন কিংবা হাজির হয়েছেন স্বশরীরে। অনেকে একে কাকতালীয় বললেও একদল মানুষ আছেন যারা তা মানতে নারাজ। তাদের দাবি, মনের কিছু শক্তি রয়েছে। মানুষের অজান্তেই সেই শক্তি কাজে লাগিয়ে এমন অদৃশ্য যোগাযোগ স্থাপন করে থাকে মানুষ। ফলে যিনি মনে মনে যে মানুষকে নিয়ে ভাবছেন, অজান্তেই সেই ভাবনা ক্রিয়া করছে সেই মানুষটির মস্তিষ্কে।
অবশ্য বিজ্ঞান মানুষের এই বিশেষ ক্ষমতা সম্পর্কে জবাব না দিলেও সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক এর সত্যতা খুঁজে পেয়েছেন। এই সম্পর্কে তিনি একটি গবেষণা গ্রন্থও প্রকাশ করেছেন। যেখানে বলা হয়েছে প্রতিটি মানুষেরই টেলিপ্যাথি শক্তি ব্যবহারের ক্ষমতা রয়েছে। যা অনেকে না জেনেই তা ব্যবহার করে থাকেন।
প্রফেসর ডিগবি টাটুম নামের ওই গবেষক ‘ইন্টারব্রেইন’ নামে বইটি প্রকাশ করেছেন। যেখানে গবেষক লিখেছেন, প্রতিটি মানুষের মনেই টেলিপ্যাথির ক্ষমতা বিরাজমান। কিন্তু খুব অল্প সংখ্যক মানুষই তার ব্যবহার জানেন। এদের মধ্যে আবার অধিকাংশই নিয়মকানুন না জেনেই তা ব্যবহার করে থাকেন।
গবেষক আরও দাবি করেছেন, টেলিপ্যাথি শুধু দূরে থাকা কোনো মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্যই ব্যবহার করা হয় না। কথা অর্থাৎ ভাবের আদান প্রদানের বিকল্প হিসেবেও এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে মানুষ। অথাৎ কোনো শব্দ না করে শুধু মনঃসংযোগ স্থাপনের মাধ্যমেই ভাব আদান প্রদান করা সম্ভব।
মনের জটিল দিক সম্পর্কে লিখতে গিয়ে ডিগবি টাটুম বলেন, বিষয়টা এমন যে আমরা পাশের ব্যক্তিটিকে দেখেই বলতে পারি তিনি সুখে নাকি কষ্টে আছেন। এজন্যে কিন্তু তার চেহারা আমরা বিচার করি না, যেটা করি সেটা তার মনের উচ্ছ্বাসের তারতম্যতা! আর সেই বিচার করতে আমরা তাকে গভীর পর্যবেক্ষণের নামে মস্তিষ্কে সংযোগ স্থাপন করি।
বিজ্ঞানী দাবি করেন, মনের এই অন্ধকার অংশকে নিয়ে কাজ করলে সমাজ গঠনে সমাজবিজ্ঞানীরা যেমন উপকৃত হবেন তেমনই মস্তিষ্কের ক্ষমতাও অনেক বেড়ে যাবে। মানসিক বিষয়গুলো নিয়েও মনোচিকিৎসকদের চিকিৎসার নতুন দুয়ার খুলে যাবে বলেও দাবি করেন ডিগবি।
ইন্টারব্রেন গ্রন্থে তিনি আরও লিখেছেন, সমাজের মানুষের মধ্যে সচেতনতামূলক বার্তাসহ যে কোনো তথ্য দ্রুত পৌঁছে দিতে টেলিপ্যাথি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া কনসার্ট, নাটক, সিনেমা, খেলাসহ জনসমাগম হয় এমন স্থানে বিনোদনও অন্য মাত্রা পাবে। তার মতে, ওয়াইফাই প্রযুক্তি যেমন অদৃশ্য যোগাযোগ স্থাপন করেছে, টেলিপ্যাথিও অনেকটা তেমনই। তবে সেটি নিয়ন্ত্রণ করে খোদ মস্তিষ্ক।
প্রফেসর দাবি করেন, আমাদের মনে যে মেঘ জমে রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা এতদিন দাবি করে আসছেন তা আসলে অজ্ঞতা। তার বক্তব্য হচ্ছে, মনের মেঘ দূর করতে হলে মস্তিষ্কের ব্যবহার আগে জানতে হবে।
মানুষের মন যে কতোটা শক্তিশালী তা ব্যবহার না করা পর্যন্ত মানুষ কল্পনাও করতে পারবে না। টেলিপ্যাথি সম্পর্কে বলতে গিয়ে এমন মন্তব্যই করেছেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ডিগবি টাটুম ।
Collected News : poriborton.com
No comments