কোচহীন আর কতদিন?
২০১৪ সালের মে মাসে মাশরাফি বিন মর্তুজা ও সাকিব আল হাসানদের দায়িত্ব নেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। এই লক্কান কোচের অধীনে টাইগাররা ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলে। এরপর ক্রিকেট বিশ্বে আলোচনায় আসেন তিনি। ওই বছরই ঘরের মাঠে ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নতুন দিনের বার্তা দেয় বাংলাদেশ। পরের বছর হোম গ্রাউন্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ড্র এবং শ্রীলঙ্কার মাটিতে লঙ্কানদের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটের সিরিজে ড্র করে টাইগাররা।
কিন্তু গত বছর নভেম্বরের শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পরপরই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন হাথুরুসিংহে। নিজের মাতৃভূমির টানে যোগ দিয়েছেন লঙ্কান ক্রিকেট দলে। এ দিকে কয়েকদিন আগে পদত্যাগ করেছেন সহকারী কোচ হ্যালসলও। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আর কতদিন টাইগার দলের প্রধান কোচের জায়গা খালি থাকবে? বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা কি গুরু হিসেবে নতুন কাউকে পাবে না?
হোম এবং অ্যাওয়ে মিলিয়ে টানা তিনটি সিরিজ কোচ ছাড়াই শেষ করল টিম টাইগাররা। তিন সিরিজে সবচেয়ে বড় সাফল্য নিদাহাস ট্রফির ঘটনাবহুল ফাইনালে শেষ বলের হারে রানার্সআপ হওয়া। এই ত্রিদেশীয় সিরিজে ভারপ্রাপ্ত কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি কোর্টনি ওয়ালশ। আগামী দুই মাস কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ নেই বাংলাদেশের। তাই কোচ নিয়োগেও ঢিলেঢালা ভাব বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)'র।
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে চলে যাওয়ার পর নতুন কোচের সন্ধানে নেমেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যে দৌড়ে টম মুডি, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারদের মতো হাই-প্রোফাইল কোচদের প্রস্তাব দিয়েও না শুনতে হয়েছে বিসিবিকে।
শেষমেশ বাংলাদেশের সাবেক কোচ রিচার্ড পাইবাসের দ্বারস্থ হয় বাংলাদেশ। বিসিবেতে এসে সাক্ষাৎকার দিয়ে গেলেও তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। পরে ফিল সিমন্সও বিসিবেতে এসে সাক্ষাৎকার দিয়ে যায়। তখন সিমন্স গণমাধ্যামে বলেছিলেন, ‘প্রতিক্রিয়া তেমন কিছুই নেই। প্রাথমিকভাবে প্রেজেন্টেশন দিয়েছি, আমি খুশি। কোচ হতে এসেছি, আমিও সেটাই চেয়েছি। তবে সবকিছুই এখন নির্ভর করছে বিসিবি'র উপর।’
তবে তাকেও নিয়োগ দেয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট (বোর্ড) বিসিবি। এর আগে গত ১০ নভেম্বর খালেদ মাহামুদ সুজন বলেন, আমি টাইগারদের কোচ হতে পুরোপুরি প্রস্তুত। তিনি আরো বলেন ‘জাতীয় দলের দায়িত্বটা আমি পাব কি না জানি না। কোচ হওয়ার কথা আমি জানি না, এটা নিয়ে কোনো কথা হয়নি। অবশ্যই আমরা চাইবো বাইরে থেকে ভালো কোচ নিয়ে আসতে। যদিও আজ একজনের কাছে শুনলাম, আমার নামও নাকি আলোচনা হচ্ছে। আমি নিজেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত নই। মানুষ কি বলছে সেসব বিষয় না। বোর্ডে এটা নিয়ে আলোচনা হবেই। তবে, যদি সুযোগ পাই তাহলে চেষ্টা করব ভালোভাবে করতে। কিন্তু শেষমেষ টাইগার দলের কোচের জায়গাটি খালিই থেকে যায়।
আবার নতুন করে গুঞ্জন উঠেছে মাশরাফি-সাকিবদের কোচ হয়ে আসছেন দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সাবেক অধিনায়ক এবং ভারতের বিশ্বকাপ জয়ী কোচ গ্যারি কারস্টেন। অনেকের মুখে শোনা যাচ্ছে তিনি পরামর্শক হয়ে আসছেন। তবে কারস্টেন কোচ নাকি পরামর্শক হয়ে আসছেন এ বিষয়ে পরিষ্কারভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না। আর আসল কথা হচ্ছে, তিনি কোচ কিংবা পরামর্শক হবেন কিনা তাও কারস্টেন পরিষ্কাভাবে জানাননি। এ সম্পর্কে বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, আসলে কারো সঙ্গে লিখিত চুক্তি হয়নি। আর গ্যারি কারস্টেন প্রসঙ্গে বিসিবি প্রধানের ব্যাখ্যা, কারস্টেনকে কোচের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তিনি রাজি হননি। তিনি চান কনসালট্যান্ট হতে। সে বিষয়ে প্রাথমিক কথা বার্তা হয়েছে।
যদি গ্যারি কারস্টেন টাইগারদের কোচ না হয় তাহলে কি বাংলাদেশ দলের কোচের জায়গা আবারো খালিই থাকবে? এমন প্রশ্ন এখন ক্রিকেট প্রেমিদের মধ্যে। এছারা কিছুদিন আগে বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, এপ্রিলের মাঝামাঝিতে কোচের নিয়োগ দেয়া হবে। কিন্তু এপ্রিলের মাঝামাঝিতে কারস্টেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন। তার মানে কারস্টেনের কোচ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে! এ দিকে বল টেম্পারিংয়ের কারণে স্মিথ, ওয়ার্নার এবং বেনক্রফটকে বিভিন্ন মেয়াদে দল থেকে বহিষ্কার করা হলে অনেকটা ভেঙে পড়েন তাদের গুরু ড্যারেন লেম্যান। সেই অভিমানে চতুর্থ টেস্টের পরে অজি দল থেকে পদত্যাগ নেবেন তিনি। অর্থাৎ এপ্রিলের মাঝামাঝিতে অলস সময় কাটাবেন তিনি।
Collected News : bd-pratidin.com
No comments